ওজন মেপে জীবিকার জোগাড়

সুস্থভাবে জন্ম নেওয়া জয়নালের দুই বছর বয়সে একবার জ্বর হয়। এর পর থেকে তার হাত-পা চিকন হতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুরো প্রতিবন্ধী হয়ে যায় জয়নাল। ৭ বছর বয়সে তাকে নানির কাছে রেখে চলে যায় বাবা-মা। প্রতিবন্ধী জয়নালকে নিয়ে বিপাকে পড়েন নানি। শুরু করেন ভিক্ষাবৃত্তি। কিন্তু বুঝতে শেখার পর জয়নাল ভিক্ষা করতে চাইত না। এরপর এক ব্যক্তির সহায়তায় ওজন মাপার মেশিন কিনে নিয়ে জীবিকার জোগাড় করে নানি-নাতি।


কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে মূল সড়কের দিকে যাওয়ার পথে এক মিনিট হাঁটলেই হাতের বাঁ পাশে চোখে পড়বে জয়নাল আবদুল ও তার নানি আলিফা খাতুনকে। একটি ওজন পরিমাপের মেশিন নিয়ে বসে জয়নাল। পর্যটকেরা সৈকত থেকে হোটেলে ফেরার পথে জয়নালের মেশিনে ওজন মাপেন। সেখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে নানি-নাতির সংসার।


জয়নালের বাবা মো. হেলালের বাড়ি ছিল লক্ষ্মীপুরে। ২৫ বছর আগে কক্সবাজারে এসে ডেকোরেশনের ব্যবসা শুরু করেন হেলাল। এরপর কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজনপাড়ার বাসিন্দা মো. মোস্তফার মেয়ে রুনাকে বিয়ে করেন। তাঁদেরই সন্তান জয়নাল। সাথী নামের জয়নালের একটা ছোট বোন আছে। ১০ বছর আগে হেলাল তাদের ছেড়ে যায়। পরে তার মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়। প্রতিবন্ধিতার কারণে জয়নালকে নানির কাছে রেখে চলে যান মা-বাবা। ছোট বোন মায়ের কাছে থাকে।


জয়নালের নানি আলিফা খাতুন বলেন, তাঁদের দুঃখের শেষ নেই। ১১ বছর আগে জয়নালের নানা সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। জয়নালের বয়স যখন ৭, তখন তার বাবা-মা তাকে ছেড়ে যান। অসুস্থ জয়নালকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি।


কিছুদিন ভিক্ষা করেছিলেন। কিন্তু জয়নাল বুঝতে শিখতে শুরু করলে ভিক্ষা করতে যেতে চাইত না। স্থানীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় একটি ওজন মাপার মেশিন কিনে নেন। এরপর জয়নাল আর তিনি ওই মেশিন নিয়ে সুগন্ধা পয়েন্টে বসেন। তাতে যা আয় হয়, তা দিয়েই তাঁদের চলে যায়।


WRITE A COMMENT